তাজিংডং (Tazing Dong), বাংলাদেশের একটি পর্বতশৃঙ্গ যা বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রী পাংশা ইউনিয়নে সাইচল পর্বতসারিতে অবস্থিত। সরকারিভাবে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এবং এর উচ্চতা ১,২৮০ মিটার (৪১৯৮.৪ ফুট)। পূর্বে কেওক্রাডংকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মনে করা হত, আধুনিক গবেষণায় এই তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে বেসরকারী গবেষণায় সাকা হাফং পর্বতকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ দাবী করা হয়, তবে এটি এখনও সরকারি স্বীকৃত নয়।
স্থানীয় উপজাতীয়দের ভাষায় ‘তাজিং’ শব্দের অর্থ বড় আর ‘ডং’ শব্দের অর্থ পাহাড়, এ দুটি শব্দ থেকে তাজিংডং পর্বতের নামকরণ করা হয়। এটি অনেকের কাছে বিজয় নামেও পরিচিত।
সামিটের সেরা সময়
তাজিংডং সামিট করার সেরা সময় শীতকাল। তাজিংডং এর রুটটা তুলনামূলকভাবে দুর্গম হওয়ায় বর্ষাকালে না যাওয়াই ভালো।
যাওয়ার উপায়
তাজিংডং সামিটে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে বান্দরবান যেতে হবে। ঢাকা থেকে বিভিন্নভাবে বান্দরবান যাওয়া যায়। বাসযোগে সরাসরিভাবে যাওয়া যায়। তবে ভেঙে ভেঙে গেলে বাস, ট্রেন, প্লেন পছন্দসই যে কোন মাধ্যম বেছে নেওয়া যাবে।
বাসে যেতে চাইলে
বান্দরবান যাওয়ার সেরা রুট হলো ঢাকা থেকে সরাসরি বাসযোগে যাওয়া। ঢাকা টু বান্দরবান রুটে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এস. আলম, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, শ্যামলি, সেন্টমার্টিন পরিবহন, ডলফিন ইত্যাদি পরিবহনের বাস বান্দরবনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এসি ও ননএসি জনপ্রতি এসব বাসের ভাড়া ৫৫০ থেকে ১৫০০ টাকা। এছাড়া ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম এসে তারপর চট্রগ্রামের বিআরটিসি টার্মিনাল বা দামপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে ১০০-৩০০ টাকায় বাস ভাড়ায় বান্দরবন আসা যায়। চট্রগ্রাম থেকে প্রাইভেট কারে ২৫০০-৩৫০০ টাকায়
ট্রেনে যেতে চাইলে
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান পর্যন্ত কোন রেল সংযোগ না থাকায় আপনাকে চট্রগ্রামগামী সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশিতা, মহানগর প্রভাতি কিংবা মহানগর গোধূলি ট্রেনে করে চট্রগ্রাম যেতে হবে প্রথমে। শ্রেণী ভেদে ট্রেন ভাড়া ৩৫০ থেকে ১৫০০ টাকা। চটগ্রাম পৌছে উপরে নিয়মে বান্দরবান যেতে হবে।
বিমানে যেতে চাইলে
বাংলাদেশ বিমান, জিএমজি এয়ার লাইনস, ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজসহ বেশকিছু বিমান ঢাকা থেকে সরাসরি চট্রগ্রাম ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। আকাশপথে চট্রগ্রাম এসে সড়ক পথে উপরে উল্লেখিত উপায়ে বান্দরবান যেতে হবে।
বান্দরবান থেকে তাজিংডং
তাজিংডং রুমায় অবস্থিত হলেও রুমা থেকে যেতে পারবেন না। কারন রুমা থেকে এখন শুধুমাত্র কেওক্রাডং পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি আছে। সর্বোচ্চ যেতে পারলেও জাদিপাই পর্যন্ত যেতে পারবেন। তাই এখন কেউ তাজিংডং সামিট করতে চাইলে তাকে থানচি হয়ে যেতে হবে। আর সেক্ষেত্রে উট হবেঃ
ঢাকা – বান্দরবন – থানছি – হেডম্যানপাড়া – শেরকরপাড়া – তাজিংডং
বান্দরবান থেকে থানচি উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৭৯ কিলোমিটার। বান্দরবান থেকে থানচি যাওয়া যায় দুইভাবে; বাসে কিংবা রিজার্ভ জীপে। বান্দরবানের থানচি বাস স্ট্যান্ড থেকে এক ঘণ্টা পর পর লোকাল বাস থানচির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। জনপ্রতি বাস ভাড়া ২০০ টাকা, সময় লাগবে ৪-৫ ঘন্টা। রিজার্ভ জীপ/চান্দের গাড়িতে গেলে খরচ হবে ৫৫০০-৬০০০ টাকা, আর সেক্ষেত্রে সময় লাগবে ৩-৩.৫ ঘন্টা। এক গাড়িতে ১২-১৪ জন অনায়াসে যাওয়া যায়। থানচি যাওয়ার সময় পথে পরবে মিলনছড়ি, চিম্বুক ও নীলগিরি। থানচি থেকে গাইড নিয়ে হেঁটে শেরকর পাড়া। শেরকর পড়া রাতে থেকে পর দিন ভোরে রওনা দিয়ে তাজিংডং চূড়ায় উঠে দুপুরের আগে শেরকর পাড়া ফিরে থানচি আসতে পারবেন। আর যদি চান শেরকর পাড়া থেকে থুইসা পাড়া হয়ে আমিয়াখুম ভেলাখুম দেখে নাফাখুম রেমাক্রি বড় পাথর রাজা পাথর তিন্দু হয়ে থানচি আসতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
থানচি থাকতে চাইলে – থানচি কুটির / বিজিব কটেজ সেরা অপশন হতে পারে।
WhatsApp us