গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল বলতে দিল্লি আগ্রা এবং জয়পুর কে বুঝানো হয়। গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল ট্যুরের জন্য আপনি প্রথমে আপনার যাত্রা শুরু করতে হবে দিল্লি থেকে। তাই দিল্লিতে পৌঁছানোর জন্য যে কয়টি ধাপ আছে সেগুলো নিয়ে আমরা প্রথমে আলোচনা করব এবং কিভাবে গেলে আপনি উপকৃত হবেন সেটা ধাপগুলো ভালোভাবে করলে আপনি বুঝতে পারবেন।
প্রথম ধাপ হলো রিলাক্স টুর মানে প্লেনে ভ্রমণ।
কলকাতা থেকে দিল্লী ভ্রমনঃ
ট্রেনে করে ভ্রমনঃ কোলকাতার ৩টা স্টেশন থেকে দিল্লির জন্য ট্রেন ছেড়ে যায়। চিটপুর, শিয়ালদাহ, শালিমার থেকে প্রত্যেকদিন ট্রেন যায়। দিল্লির অনেক স্টেশনে ট্রেন থামে। আপনি দিল্লির যেই জায়গায় হোটেল বুক করবেন সেই যায়গার কাছাকাছি স্টেশনে নামবেন। যেমন দিল্লী ক্যান্টনমেন্ট, আযাদপুর, নিজামুদ্দিন, সদর বাজার ইত্যাদি। দিল্লির নিজামুদ্দিন এর কাছাকাছি থাকলে কিছু সুবিধা আছে। এখান থেকে সব দর্শনীয় স্থানগুলো কাছাকাছি। বেবি টেক্সি ভাড়া করে যাওয়া যায়। সেখানে ভাড়া ৩০ টাকা থেকে শুরু। অনেক দামদামি করতে হবে। যেই ডিস্টেন্স ৬০ রূপি চাইবে সেখানে ৩০ রূপি দিয়েই যাওয়া যায়। ট্রেনের ভাড়া ৪০০ রূপি থেকে ৪০০০ রূপি পর্যন্ত হয়ে থাকে। আপনি চাইলেই https://www.irctc.co.in/ ওয়েবসাইট থেকে আপনার টিকিট কেটে নিতে পারেন বাংলাদেশে বসে। পাশাপাশি সিট না পরলেও এক বগিতে সিট পরবেই। তাই পরবর্তীতে ট্রেনে উঠে আপনি সহজেই সিট চেঞ্জ করে নিতে পারবেন আরেকজনের সাথে। সেটা নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না। অনেক ট্রেন যায় কলকাতা থেকে দিল্লী। এর মধ্যে আছে NEW DELHI Poorva Exp Covid SF Special, NEW DELHI Rajdhani Exp।
বাসে কিংবা গাড়িতে ভ্রমনঃ কোলকাতার হাওড়া স্টেশন থেকে বাসেও আপনি দিল্লী যেতে পারেন। একটু মোটামুটি মানের বাসের ভাড়া ১০০০-১২০০ রূপি হয়ে থাকে। কিন্তু বাস জার্নি অনেক কষ্টের। ২৪-৩৬ ঘন্টা সময় লাগতে পারে। তাই বাসে খুব কম মানুষই ভ্রমন করতে চায় এত দুরের পথ। অনেকে আবার বিভিন্ন ইন্ডিয়ান ট্রাভেল এজেন্সির থেকে গাড়ি ভাড়া করে নেন কন্ট্যাক্টে। কিন্তু এটাও বুদ্ধিমানের কাজ না। কারন কলকাতা থেকে দিল্লী ১৫০০ কিমি আর প্রতি কিমি ২৫ রূপি করে চার্জ করে কার রেন্টাল সার্ভিস যারা দেন।
ডুয়েল কারেন্সির ক্রেডিট কার্ড থাকলে আপনি ঘরে বসেই সমস্ত ট্রেন , বাস, আর এয়ার এর টিকেট অনায়াসেই কাটতে পারবেন।
কোথায় থাকবেনঃ দিল্লীতে কম খরচে থাকার জন্য ষ্ট্যাশন থেকে একটু দূরে থাকার চেষ্টা করুন। এছাড়া চাঁদনী চক এর তামান্না গেষ্ট হাউস ভাল হবে। মুসলিম এলাকায় থাকতে চাইলে দিল্লী জামে মসজিদের পাশে চলে যেতে পারেন। সেখানে খাবার অনেক ভাল।
টাকা পরিবর্তনঃ দিল্লী জামে মসজিদের ( ভাল দাম পাবেন ) সামনে থেকে আপনি অনায়াসেই আপনার টাকা অথবা ডলার রুপিতে পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
কিভাবে ঘুরবেনঃ বলে রাখি যে , দিল্লীতে ঘুরার জন্য মেট্রো রেল হচ্ছে সেরা বাহন এবং খরচও কম। মেট্রো ষ্ট্যাশন থেকে একটি মেট্রো কার্ড করিয়ে নিন আর দিব্বি ঘুরতে থাকুন।
কোথায় ঘুরবেনঃ ঘুরার জন্য আপনি লাল কিল্লা (Red Fort) , হুমায়ুন টম্ব (Humaun Tomb), দিল্লী জামে মসজিদ , কুতুব মিনার , লোটাস টেম্পল , ইন্ডীয়া গেট ( রাতে বেশী ভাল লাগবে ) যেতে পারেন। এক দিনেই সবগুলো স্পট কভার করা সম্ভব নয়। ১ দিনে আপনি লাল কিল্লা (Red Fort) , হুমায়ুন টম্ব (Humaun Tomb) ঘুরে দেখতে পারেন। ২ তাই অনেক বড় জায়গা। ভালোই সময় লাগে। এন্ট্রি ফী অনেক বেশি। জন প্রতি ৬০০ রুপি! ১ দিন সময় বেশি নিয়ে আজমির শরিফ ঘুরে আসতে পারেন। একটা টেক্সি বুক করবেন OLA App দিয়ে। গুগল ম্যাপ দেখে দেখে মেট্রো অথবা বেবি টেক্সি নিয়ে ঘুরতে পারেন। এখন OLA UBER থাকার কারনে টুরিস্টদের ঘুরতে কোন সমস্যা হয় না। কারন OLA, UBER অনেক রিজনেবল ভাড়া নেয়।
কোথায় খাবেনঃ দিল্লীর স্ট্রিট ফুড বেশ ভাল , মন ভরে খাবেন। অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য একবার ম্যাকডোনাল্ডস এ যেতে পারেন। দিল্লীর লাড্ডু খেতে হালদি রামস এ যেতে পারেন ( চাঁদনী চক )। তবে পেট ভরে বিরিয়ানি (গরু কিন্তু দিল্লীতে ব্যান ) আর কাবাব খেতে দিল্লী জামে মসজিদের সামনে চলে যান। লোকাল রেষ্টুরেন্ট গুলোর পাশাপাশি চাইলে কারিমস এও একবার ঢূ মারতে পারেন। দিল্লী মসজিদের সামনে, রাস্তার পাশের একটি দোকান থেকে কেসার পিস্তা অবশ্যই খাবেন। ( এখনো মুখে লেগে আছে )
কেনাকাটা কোথায় করবেনঃ কেনাকাটা করার জন্য মেট্রোতে করে সোজা কারোলবাগ চলে যান, তবে মাথায় রাখবেন কারোলবাগ এর ফুটপাত আমাদের গুলিস্তানের চাইতেও বেশী বাটপারে ভরপুর। ব্র্যান্ডের দোকান থেকে নিশ্চিন্তে কেনাকাটা করুন আর ফুটপাত হতে বুঝেশুনে দরদাম করে কিনুন। এছাড়া পাঞ্জাবি আর বোরখা কিনতে দিল্লী জামে মসজিদের সামনে চলে যান।
আর যদি থাইল্যান্ড এর মত জায়গা চান তাহলে সোজা চলে যান City Walk Mall. দিল্লির বেস্ট শপিং মল এটা। পুরো বিদেশের ঘ্রান পাবেন। সব ব্র্যান্ডের দোকান, খাবারের দোকানগুলো সেই !
দিল্লি টু আগ্রা ( তাজমহল ) :
দিল্লিতে সারাদিন একদিন ঘুরে পরেরদিন আপনি দুপুরে ট্রেনে আগ্রা চলে যেতে পারেন। আগ্রা পৌঁছাতে মাত্র 3 থেকে সাড়ে 3 ঘন্টা সময় লাগবে। তাই দুপুরের ট্রেনে রওনা দিলে সন্ধ্যার আগেই আপনি আগ্রা পৌঁছে যাবেন। দিল্লী থেকে আগ্রা যাওয়ার জন্য ভোর ৬ টা থেকে ট্রেন থাকে। সারাদিনে অনেক ট্রেন আছে। https://www.irctc.co.in/ থেকে আপনি ট্রেনের টিকিট কেটে নিতে পারেন। অনেকেই দিল্লী থেকে আগ্রা এবং জয়পুর হয়ে আবার দিল্লী ফিরে আসার জন্য সেডান গাড়ি ভাড়া করেন দিল্লির ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছ থেকে। পার কিঃমিঃ ১০-১৫ রূপি চার্জ করে থাকে এরা। তাই আপনার যদি সংখ্যায় কমপক্ষে ৪ জন হন তাহলে এই প্ল্যান করতে পারেন। তা না হলে এই প্ল্যান বেকার। গাড়ি ভাড়া করলে যেখানে ইচ্ছে সেখানেই থামা যায়। আপনাকে শুধু কিঃমিঃ হিসেবে চার্জ দেয়া লাগবে এবং ড্রাইভারের থাকা খাওয়ার খরচ দেয়া লাগবে।
যদি ট্রেনে যান তাহলে দিল্লি থেকে সকাল ৮ টার ট্রেনে আগ্রা চলে যান। গতিমান এক্সপ্রেস ২ ঘন্টায় পৌঁছে দিবে। অন্য ট্রেন কম বেশি দেরি করলেও এই ট্রেন করে না। তাই সাবধান। আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে নেমে বেবি টেক্সি নিয়ে নিবেন। ১০০ রূপি চাইবে। ৫০ রুপিতে যেতে পারবেন যদি ব্যাটারি চালিত গাড়িতে উঠেন। তবে স্টেশন থেকে বের হয়ে গাড়ি ভাড়া করবেন। তা না হলে স্টেশনের সামনে দালালগুলো বাঁশ দিয়ে দিবে। অনেক বিরক্ত করে এরা। ৫ কিঃমিঃ এর জন্য ১০০০ রুপিও চেয়ে বসবে। একবার ভাড়া নিয়েছেন তো বিপদে পড়েছেন।
আগ্রাতে চেষ্টা করবেন তাজমহলের একদম পাশেই হোটেল নিয়ে থাকতে যেন পাঁচ মিনিটেই তাজমহল দেখতে চলে যেতে পারেন। হোটেলের মধ্যে বিখ্যাত হল Joyes Hostel. এটা তাজমহল এর সাউথ গেট থেকে ৫ মিনিট দূরে। এদের রেস্টুরেন্ট থেকে তাজমহলের সেই ভিউ পাওয়া যায়। ১ রাত ভাড়া প্রায় ১৮০০ রূপী। কিছু হোটেল আছে যাদের ছাদে উঠলেই তাজমহল দেখা যায়। আপনি চেষ্টা করবেন সেই ধরনের হোটেল গুলোতে থাকতে। অন্যান্য হোটেল গুলোর কোনটার মান ভাল না। রুমে মশা থাকতে পারে। আগ্রাতে বাদরের অনেক উৎপাত। তাই হোটেলের রুম ভাল ভাবে বন্ধ রাখবেন। তাজমহলের ভিতরেও অনেক বাদর দেখবেন।
আগ্রা বিখ্যাত হলো তাজমহলের জন্য। তাজমহল এমন একটি নিদর্শন যেটা একবার দেখলে মন ভরবে না, বারবার দেখতে ইচ্ছা করবে। সম্পূর্ণ অর্ধেক দিন আপনি তাজমহলের জন্য রেখে দিতে পারেন এছাড়াও আগ্রা ফোর্ট অনেক বিখ্যাত। সকালে তাজমহল দেখলে দুপুরের খাবারের পর আগ্রা ফোর্ট দেখতে বের হয়ে যান। তাজমহল থেকে ৩ কিঃমিঃ দূরে, বেবিটেক্সি ভাড়া ৬০ রুপির মত। আগ্রাতে মোটামুটি দুই দিন সময় হাতে রাখলে ভাল ভাবে ঘুরে দেখতে পারেন।
আগ্রা ফোর্টঃ খুবই সুন্দর জায়গা। তাজমহল থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ২/৩ ঘন্টা সময় নিয়ে যাবেন। টিকিট মাত্র ৩৫ রূপী। বিকেল ৪টার আগেই প্রবেশ করতে হবে। সন্ধ্যা হলে বের হয়ে যেতে হবে। এখানেও ভিতরে ট্রাইপড আর খাবার নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। আগ্রা ফোর্ট এ কাঠবিড়ালিদের খাবার খাওয়াতে ভুলবেন না। দারুন ছবি তুলতে পারবেন তাদের সাথে কোন টাকা ছাড়াই !
আগ্রাতে কোথায় ঘুরবেনঃ তাজমহল, আগ্রা কিল্লা ( তাজমহল থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত) এই দুইটা অবশ্যই যাবেন, আর সাথে কখনই গাইড নিবেন না। মজার ব্যপার হল, তাজমহলে টিকিট যখন কাটতে যাবেন তখন অনেক দুষ্টু গাইড আপনাকে বলবে যে গাইড না সাথে নিলে তাজমহলের ভিতর ঢুকতেই পারবেন না !! এসব কথায় কান দিবেন না। আজাইরা আপনার কাছে ২০০-৩০০ রূপি চাইবে। ভিতরে ঘুরার জন্য কোন গাইড লাগে না আর গাইডের কাছে হিস্টোরির কথা শুনা আর মিথ্যায় পা দেয়া এক কথা। সময় হাতে রাখার চেষ্টা করুন তাহলে ফাতেহপুর শিকড়িটাও ঘুরতে পারবেন। অন্য পোস্টে ফাতেহপুর শিকড়ির কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
আগ্রায় কেনাকাটা কোথায় করবেনঃ কেনাকাটা করারই দরকার নাই এখানে, HAND-LOOM PRODUCT এর একটা বিশাল দালাল চক্র ( রিক্সাআলা আর ট্যাক্সিক্যাব ড্রাইভার গুলাসহ ) এখানে সক্রিয় , সুতরাং এড়িয়ে চলুন।
আগ্রায় কোথায় খাবেনঃ রাস্তার পাশের হোটেল গুলোতে অল্পতে খেয়ে নিতে পারবেন অন্যথা ষ্ট্যাশন এর ভিতরেও একটু বেশী দাম দিয়ে খেতে পারবেন। এছাড়া প্রত্যেক হোটেলে নিজেদের রেস্টুরেন্ট থাকে। Joyes Agra Hostel এর রেস্টুরেন্ট অনেক ভালো।
আগ্রা থেকে জয়পুর
আগ্রাতে ২ দিন ঘুরে পরের দিন আপনি সরাসরি জয়পুরের ট্রেন ধরতে পারেন। আগ্রা থেকে জয়পুর যেতে ৫ ঘন্টা সময় লাগে। রাজস্থানের বিখ্যাত একটি সিটি হল জয়পুর। সম্পূর্ণ রাজস্থান ঘুরতে এক সপ্তা সময় হাতে নিয়ে যাওয়া উত্তম। আর যদি আপনি বললেন ট্রাইংগেল ঘুরেই দেখতে চান তাহলে জয়পুর জন্য দুই দিন সম্পূর্ণ হাতে রাখবেন আরেকদিন শপিং করার জন্য হাতে রাখবেন। জয়পুর অনেক কিছু ভ্রমণের জায়গা আছে যা আপনি দুইদিন দেখে শেষ করতে পারবেন আর একটা দিন সম্পূর্ণ দিন সময় রাখা উচিত যদি মেয়েরা জয়পুরে যেয়ে থাকেন তাহলে একটা দিন রাখতে পারেন কেনাকাটার জন্য। অনেক ব্যবসায়ীরা জয়পুর যায় ব্যবসার প্রয়োজনে। কারণ বাংলাদেশের এন্টিক জুয়েলারি এবং গহনার জন্য জয়পুর বিখ্যাত জয়পুরি গহনা বাংলাদেশের প্রায় ৫ থেকে ১০ গুণ দামে বিক্রি হয়। মেয়েরা কেনাকাটার জন্য একদিন সময় হাতে রাখেন।
জয়পুর কে পিংক সিটি বলা হয়। দেখতে পিংক এর মতো মনে হবে না আপনার কোন দিক দিয়েই। শহরের বাইরের অংশটা অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কিন্তু যেসব জায়গায় হোটেলগুলো অবস্থিত সে সব জায়গার অলিগলি অনেক অপরিষ্কার এবং দুর্গন্ধময়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে অলিতে-গলিতে গরু হাঁটাহাঁটি করে মলমূত্র করে এবং শুকর দেখতে পাওয়া যায়। জয়পুরের মানুষরা গরুকে মা দেবতার মত শ্রদ্ধা করে। তাই আপনি হোটেলগুলোতে যখন থাকতে যাবেন দেখবেন হোটেলগুলোর বাইরের অংশ অনেক অপরিষ্কার কিন্তু অনেক হোটেলের ভিতরে অনেক পরিষ্কার এবং সুন্দর। তাই বাইরের গলিতে অপরিষ্কার দেখলে ঘাবড়ে যাবেন না। যথারীতি বুকিং ডট কম থেকে রেটিং ভালো দেখে ভালো মানে হোটেল আপনি জয়পুরে বুকিং করে নিতে পারেন। ভালো মনে হোটেলগুলো প্রত্যেকদিন ১০০০ থেকে ১৫০০ রুপিতে পাওয়া যায়। অনেক হোটেলেই ব্রেকফাস্ট থাকে। জয়পুরে দুইদিন থাকলেই যথেষ্ট । দুইদিনে আপনি সবকিছু ঘুরে দেখতে পারবেন। অনেকে একদিন এই সবকিছু ঘুরে দেখতে পারেন। জয়পুরে পিংক সিটির মধ্যে যেসব জায়গায় আপনি ঘুরে দেখতে পারেন তার মধ্যে আছে সিটি প্যালেস, যন্তর মন্তর, হাওয়া মহল। এই জায়গাগুলো একদমই শহরে মেইন রোডের সাথে। আপনি চাইলেই গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে হেঁটে হেঁটে ভ্রমণ করতে পারবেন। এরপর একটি OLA বুক করে আপনি সরাসরি চলে যাবেন আমির প্যালেসে। আমির প্যালেসকে অনেকে আম্বার ফোর্ট বলে থাকে। আমির প্যালেস যেতে রাস্তায় আপনার সামনে পরবে জলমহল। সেখানে আপনি গাড়ি থামিয়ে ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে দেখতে পারেন। আমির প্যালেস টা অনেক সুন্দর, কিছুটা দূরে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শহর থেকে। সেখানে আপনি ঘন্টা তিনেক সময় হাতে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। ফোর্ট এর ভিতরে আপনি অনেক কিছু দেখতে পারবেন। ফোর্ট এর উপরে চূড়ায় উঠলে সেখান থেকে মোটামুটি জয়পুর সিটি টা দেখা যায়। এছাড়াও জয়পুরে আরেকটা দারুন ফোর্ট আছে যার নাম নাহারগাড় ফোর্ট। এখানে অবশ্যই যাবেন। আম্বার ফোর্ট থেকে মাত্র ৩/৪ কিঃমিঃ সামনে অবস্থিত। কিন্তু নাহারগাড় ফোর্ট যেতে জমিন থেকে আপনাকে ১০ কিঃমিঃ উপরে উঠতে হবে। অনেক টেক্সিওয়ালা এখানে বাটপারি করে। উপরে যাওয়া যাবে না, যেতে কষ্ট এসব ফালতু কথা বলবে কিন্তু সহজেই উপরে উঠা যায়। তবে নাহারগাড় ফোর্ট যেতে চাইলে উপরে উঠা নামা সহ দাম ঠিক করে নিবেন। ২০০ রুপির মত। কারন উপর থেকে নামার জন্য আলাদা গাড়ি পাওয়া যায় না। ভাড়াও বেশি চায়। আর আপনি গাড়ি নিয়ে গেলে পার্কিং এর জন্য ২০০ রুপি নিবে। যদি ৫০০ মিটার হাটতে পারেন তাহলে পার্কিং না নিলেও চলবে।
জয়পুরে আসলে অবশ্যই আপনি এন্টিক জুয়েলারি কিনবেন আপনার ফ্যামিলির মেয়েদের জন্য কারণ এখানে অ্যান্টিক জুয়েলারি গুলো বাংলাদেশ অনেক দামে বিক্রি হয় তবে এখানেও আপনার দাম দর করে কিনতে হবে। বড়বাজারে আপনি এসব দোকান পাবেন সেখানে ৫০০০ রুপির জিনিস আপনাকে দাম দর করে ১৫০০ থেকে ২০০০ রুপিতে কিনতে হবে। ১০০০ রুপির জিনিস দাম দর করে ৩০০ রুপিতে কিনতে হবে। ইউটিউবে ভিডিও দেখে ধারনা নিতে পারেন। এছাড়াও নানা রকম জয়পুরের কাপড়চোপড় দেখতে পারেন। ৫০০ রুপিতে অনেক ভাল ভাল কাপড়, চাদর আপনি জয়পুরে পাবেন।
জয়পুরে ভাল ভাল খাবারের দোকান আছে। ডগলা নামের রেস্টুরেন্ট এ খেতে পারেন। এটা পিঙ্ক সিটির মধ্যে অবস্থিত। ছাদের উপর একটি সুন্দর রেস্টুরেন্ট। খাবারের দাম বাংলাদেশের মতই কিন্তু মান অনেক ভাল। এছাড়া থালি সিস্টেমে ভাত পাবেন অনেক দোকানে। এক থালি ১০০ রুপি। আনলিমিটেড রুটি আর সবজি। ভাত , ডাল , তরকারি কিন্তু লিমিট।
জয়পুর থেকে ফেরত আসার সময় সরাসরি দিল্লীর ট্রেন নিতে পারেন এবং দিল্লী থেকে কলকাতা ট্রেন। কিন্তু জয়পুর থেকে কোলকাতার সরাসরি প্লেন আছে। ভাড়া মাত্র ৭৫০০ রুপির মত। ৩ ঘন্টার কম সময় লাগে। তাই প্লেনে করে ফেরত আসলে আপনার কস্ট অনেক কম হবে।
1 Comment
Darun lekha !!